স্পোর্টস ডেস্ক: ৫ দিনের কোন একদিনে ১৮ উইকেট পতনের রেকর্ডও আছে বাংলাদেশে। ইতিহাস জানাচ্ছে, ঠিক ২০ বছর আগে ২০০৩ সালে দেশের ক্রীড়াকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে (বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু) বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার টেস্টের তৃতীয় দিন ১৮ উইকেট পতনের রেকর্ডও আছে।
আর মিরপুরের শেরে বাংলায় ২০১৬ সালে বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের টেস্টের তৃতীয় দিন ১৭ উইকেটের পতন ঘটেছিল। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম হারায় ৭ উইকেট। এরপর ইংলিশরা দ্বিতীয় ইনিংসের সবকটা উইকেট হারায় মাত্র ১৬৪ রানে।
যদিও, গত ২২-২৩ বছরে বাংলাদেশে হওয়া কোন টেস্টের প্রথম দিন ১৫ উইকেটের পতন ঘটেনি। আজ ৬ ডিসেম্বর মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেটে সেই ঘটনা প্রথম ঘটলো।
উইকেটের অবস্থা বেশ খারাপ। ভয়ঙ্কর, বিপজ্জনক। সিলেটের তুলনায় বল অনেক শার্প টান করেছে। গতি ও বাউন্স দুই’ই কম। গতি আর বাউন্স কম; কিন্তু টার্ন বেশি এবং শার্প। এমন উইকেটে টিকে থাকা কঠিন, দু’দলের ১৫ ব্যাটার তা পারেননিও।
এখন প্রশ্ন হলো, এমন স্পিন বান্ধব পিচে খেলাই কি বাংলাদেশের লক্ষ্য ও পরিকল্পনার অংশ? বাংলাদেশ কি ইচ্ছা করেই তবে এমন ভয়ংকর টার্নিং উইকেট বেছে নিয়েছে?
অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ বোঝাতে চাইলেন, টিম ম্যানেজমেন্টই এমন উইকেট চায়। তিনি বলেন, ‘আসলে সবাই হোম অ্যাডভান্টেজ নেয়। জিততে সামর্থ্যের সেরা কৌশল ও অস্ত্র ব্যবহারের উপযোগী পরিবেশ চায়। আমরাও তাই চাচ্ছি।’
প্রশ্ন উঠলো সিলেটের উইকেটেও বল টার্ন করেছে। স্পিনাররা সহায়তা পেয়েছেন। বাঁ-হাতি তাইজুল ১০ উইকেট দখল করেছেন; কিন্তু ওই পিচে বাংলাদেশ ২ ইনিংসেই ৩০০’র ওপর (৩১০ ও ৩৩৮) রান করেছে। আর নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩১৭ করেও শেষ ইনিংসে বাংলাদেশের স্পিনারদের দাপটে ১৮১ তে অলআউট হয়ে দেড়শো রানে হেরেছে।
কিন্তু মিরপুরে শেরে বাংলার পিচে তো বাংলাদেশ ১৭২ রানে অলআউট হয়েও প্রথম ইনিংসে লিডের স্বপ্ন দেখছে এবং কিউই মিডল ও লেট অর্ডার দ্বিতীয় দিন অতিনাটকীয় কিছু করতে না পারলে হয়তো শান্তর দল লিড পাবেও।
এমন পিচ বেছে নেয়া হলো কেন? এর উত্তরে মিরাজ বলেন, ‘আমাদের স্পিন অ্যাটাক ভালো, সুযোগ তো অবশ্যই থাকে। সিলেটের উইকেটও স্লো ছিল, ব্যাটাররা সহায়তা পেয়েছে পরে আবার স্পিনাররা সহায়তা পেয়েছে। আমরা তো মিরপুরে খেলে অভ্যস্ত। বাইরে গেলে প্রত্যেক দলই হোম এডভান্টেজ নিতে চায়। আমরাও একটু হোম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
‘যেহেতু টেস্ট ক্রিকেট এবং প্রথম ম্যাচ জিতে যেহেতু এগিয়ে আছি, এই টেস্ট জিততে পারলে পয়েন্ট টেবিলেও এগিয়ে থাকব। এটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। দুটি ম্যাচই জিতলে দলের অবস্থান অনেক উপরে চলে যাবে। যতটুকু এডভান্টেজ আছে অবশ্যই নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা যদি প্রতিপক্ষকে অলআউটই না করতে পারি, তাহলে তো জিততে পারব না। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার সাথে অনেকটা এরকম উইকেটেই আমরা জিতেছি।’